• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৪ অপরাহ্ন |

সৈয়দপুরে ব্যস্ততম সড়কে বিপদজ্জনক ট্রান্সফরমার: দূর্ঘটনার আশঙ্কা

বিশেষ প্রতিনিধি।। নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ব্যস্ততম শহীদ তুলশীরাম সড়কের (টিআর রোড) ওপর ১১ হাজার ভোল্টের বৈদ্যূতিক একটি  ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে। গত ৭ জুন থেকে সেখানে ট্রান্সফরমাটি বসানো রয়েছে। এতে করে এ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহনের চালকরা দূর্ঘটনার আশঙ্কায় করছেন।
জানা গেছে, উত্তর জনপদের একটি বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুর। এ শহরের বেশ কয়েকটি ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলার মধ্যে একটি হচ্ছে শহীদ তুলশীরাম সড়ক (টিআর রোড)। এ সড়কে সৈয়দপুর সদর পুলিশ ফাঁড়ি, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, বেসিক ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক-বীমার কার্যালয়, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়, অনেকগুলো ইলেকট্রনিকস্ শো-রুম, নিউ শাহজালাল হোটেল ও নাটোর দই ঘরের মতো হোটেল রেঁস্তোরা রয়েছে। এছাড়াও এ সড়ক দিয়ে আসা যাওয়া করতে হয় সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, সৈয়দপুর সরকারি কলেজ, সৈয়দপুর পৌরসভা কার্যালয়, সৈয়দপুর পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টার, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, সামাজিক বনায়নও নার্সারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় শ্মশান, কেন্দ্রীয় মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো। আর পশ্চিম দিক থেকে সৈয়দপুর শহরে প্রবেশের প্রধান সড়কই এটি। আর সৈয়দপুর সদর পুলিশ ফাঁড়ির পাশে শহীদ ডা. বদিউজ্জামান মার্কেট। ওই মার্কেটের বিপরীতে রয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ঠিক সামনে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের ১১ হাজার ভোল্টের একটি ট্রান্সফরমা রয়েছে। গত ৭ জুন ওই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন বৈদ্যূতিক ট্রান্সফরমাটি আকস্মিক পুড়ে গিয়ে  বিকল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নেকসো’র বিদ্যূৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সেখানে একটি ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা স্থাপন করে। মূলতঃ ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি বসিয়ে ওই এলাকায় বিদ্যূৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।
নেসকো’র একটি সূত্রে জানা গেছে, যে কোন স্থানে বৈদ্যূতিক খুঁটিতে থাকা স্থায়ী ট্রান্সফরমা বিকল হলে সেখানে ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা লাগানো হয়। পরবর্তীতে বিকল বৈদ্যূতিক ট্রান্সফরমা মেরামত সাপেক্ষে কিংবা নতুন ট্রান্সফরমা বসিয়ে ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমা সরিয়ে নেয়া হয়। তাই ধারাবাহিকতায় শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কে বৈদ্যূতিক খুঁটিতে থাকা ট্রান্সফরমাটি বিকল হলে সেখানে  একটি ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি বসানো হয়েছে।
কিন্তু শহীদ তুলশীরাম সড়কে শহীদ ডা. বদিউজ্জামান মার্কেটের সামনে সড়কের ওপর বসানো ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি বসানোর এক মাস পেরিয়ে গেলেও সেটি সরিয়ে নেয়া হয়নি অদ্যাবধি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই চাকাবিশিস্ট একটি লোহার খাঁচা। ট্রলির মতো দেখতে। খাঁচার গায়ে স্টিলের প্লেটে ইংরেজিতে ডেইঞ্জার (বিপদজ্জনক) ও ১১,০০০ ভোল্ট লেখা রয়েছে। আর বিপদজ্জনক বুঝাতে সেটির দুই পাশে দুইটি লাল কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কের একটি ইলেকট্রনিক্স শো-রুমের ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,এটি ব্যস্ততম সড়ক। পশ্চিম দিয়ে থেকে সৈয়দপুর শহরে প্রবেশের এটিই একমাত্র পথ। এই পথে দিনে রাতে চব্বিশ ঘন্টায় বিভিন্ন রকম যানবাহন চলাচল করে। এসবের মধ্যে রয়েছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, চার্জার রিকশাভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কার্ভার্ড ভ্যান,ট্রাক ও দূরপাল্লার দিবা ও নৈশকোচ। অথচ এক মাস যাবৎ এ সড়ক ব্যস্ততম সড়কের ওপর একটি ট্রান্সফরমা বসিয়ে রাখা হয়েছে।
চার্জার রিকশা ভ্যান চালক নওশাদ হোসেন জানান, এ সড়কের একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মালামাল আনা নেয়া করি। দিনে রাতে কত বার যে এ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তার কোন ইয়াত্তা নেই। সড়কের ওপর বৈদ্যূতিক ট্রান্সফরমাটি থাকায় ভয় হয়। আর্তকে আছি কখন কে যে মারাত্মক দূর্ঘটনায় পড়েন।
নেসকো’র নীলফামারীর সৈয়দপুর বিদ্যূৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বিকল ট্রান্সফরমাটির বিপরীতে এখনও নতুন ট্রান্সফরমা বরাদ্দ মেলেনি। তবে দ্রুতই নতুন ট্রান্সফরমা বরাদ্দ মিলবে বলে জানান তিনি। আর তখন ভ্রাম্যমান ট্রান্সফরমাটি নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

আর্কাইভ